
প্রকাশিত: Tue, Dec 19, 2023 7:56 PM আপডেট: Mon, May 12, 2025 10:17 AM
[১] পঞ্চগড়ে হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
মাহামুদুল
ইসলাম জয়, পঞ্চগড়: [২] দিনের তাপমাত্রা
স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে কমতে
থাকে। রাতভর হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়ছে দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়। মানুষ থেকে গৃহপালিত পশু পর্যন্ত কাপছে রাতের ঠান্ডায়। টানা চারদিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে এই জেলায়। ৯ থেকে
১০ ডিগ্রির তাপমাত্রা উঠানামার মধ্য দিয়ে এ জেলায় বইছে
মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।মঙ্গলবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫
ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। তার আগে ভোর ৬টায় রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক
৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এর আগে গতকাল
সোমবার সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭
ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৯ দশমিক
৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১৭ ডিসেম্বর
১০ ডিগ্রি ও ১৬ ডিসেম্বর
৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস
তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৭
ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।[৩] তেতুলিয়া আবহাওয়া
অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান,
গত চারদিন ধরে এ জেলায় ১০
ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা থাকছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অঞ্চলে মৃদু
থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি। সকাল ৭ টা থেকে
সূর্যের কিরণে আলো ছড়ালেও রাত তিনটা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত তাপমাত্রার পারদ কমে হারকাপানো ঠান্ডায় কাতর হয়ে পরে উত্তরের এই জনপদের মানুষ।
[৪] স্থানীয়রা জানান, বিকেল থেকে হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রাটা বেশি বাড়তে থাকে। তবে সকাল ১০টা থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে।স্থানীয় গৃহিনীদের কাছে জানা যায়, সকালে কুয়াশা না থাকলেও প্রচন্ড ঠান্ডা। রাতে বৃষ্টির ফোটার মতো শিশির ঝরা শব্দ শোনা যায়। ঘরের মেঝে থেকে শুরু করে আসবাপত্র ও বিছানা পর্যন্ত বরফের মত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। সকালে গৃহস্থালী করতে গিয়ে কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। [৫] এ সময়টাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
এদিকে বরফঝরা শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে হিম সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলে পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। পরিবারের ভরণ-ৎপোষনের জন্য কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। মহানন্দা ও ডাহুক নদীতে পাথর তোলা কয়েকজন পাথর শ্রমিক জানায়, নদীর পানি বরফের মতো ঠান্ডা। পাথর তুলেই জীবিকা নির্বাহ করি। তাই পেটের তাগিদেই বরফ জলে নেমে পাথর তুলতে হচ্ছে।
[৬] স্থানীয় চা শ্রমিকরা জানান, এখন আগের মতো কুয়াশা নেই। কিন্তু কনকনে শীতের মধ্যেই চা বাগানে পাতা তুলতে এসে হাত-পা অবশ হয়ে আসছে। তবুও জীবিকার তাগিদে কাজ করতে হচ্ছে।এদিকে শীতের কারণে বাড়তে শুরু করে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ ব্যাধি। জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোতে আউটডোরে ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়তে শুরু করেছে।চিকিৎকরা চিকিৎসরা পাশাপাশি শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন।জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, ‘প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।